বিগত কয়েক বছরে, পড়াশোনার সুযোগের এক নতুন দিগন্ত খুলে গেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের এখন আর ক্লাসের চার দেওয়ালের মধ্যে আটকে থেকে পড়াশোনা করতে হয় না। প্রযুক্তির উন্নতি সমগ্র বিশ্বের ইনস্টিটিউটগুলোকে অনলাইনে পড়াশোনা অব্যাহত রাখতে সাহায্য করেছে।
যদিও কিছুটা সময়ের জন্য শিক্ষার বিকাশ বিস্তার লাভ করেছিল, কিন্তু কোভিড-19 মহামারীর সময়ে এই ইন্ডাস্ট্রী নতুনরূপে ভাবতে বাধ্য হয়েছে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম এবং অনলাইনে ক্লাস করার একটা নতুন দিক তুলে ধরেছে।
ভালোভাবে বলতে গেলে, ‘অনলাইন লার্নিং হল ইলেকট্রনিক শিক্ষার একটা রূপ যা চিরাচরিত ক্লাসরুমের পরিবর্তে ইন্টারনেটে-এর মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান করে থাকে। অনলাইনে বিভিন্ন পদ্ধতির মাধ্যমে পড়াশোনা করালেও, শিক্ষার্থীদের জ্ঞান সম্বন্ধে জানার জন্য সেখানেও তাদের টেস্ট এবং পরীক্ষা নেওয়া হয়।’
যদিও এই বিষয়টা নিয়ে যথেষ্ট পরিমাণে সংশয় রয়েছে, কারণ বিশেষ করে বর্তমান প্রজন্ম নতুন এই পদ্ধতির সাথে সবেমাত্র পরিচিত হয়েছে, তবুও এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম শিক্ষালাভ করার একটা নতুন দিগন্তের উন্মোচন করেছে।
স্ট্যাটিস্টা-এর মতে, 2026 সালের মধ্যে সারা বিশ্ব জুড়ে অনলাইন শিক্ষার মার্কেটের বিস্তার 370 বিলিয়ন ডলারেরও বেশি হবে। তাহলে বোঝাই যাচ্ছে, এটা কি করে সম্ভব হবে? অনলাইন লার্নিং শিক্ষার সাইটগুলির উপর শিক্ষার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে কেন?
- নিজের মতো করে শেখার অভিজ্ঞতা – অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্ম-এ ছোটো ছোটো অনলাইন ক্লাস রয়েছে, এমনকি একের পর এক টিউটরিং রয়েছে। এর জন্য প্রত্যেক শিক্ষার্থী তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী আলাদা আলাদা ভাবে শিখতে পারে। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা নিঃসঙ্কোচে তাদের সমস্যার কথা শিক্ষকদের বলতে পারে।
- এটা বিভিন্ন ধরণের প্রোগ্রামের সুবিধা প্রদান করে – ইন্টারনেট-এ শেখার জন্য বিভিন্ন ধরনের বহু বিষয় রয়েছে। ডিগ্রী এবং ডিপ্লোমা প্রদানকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বর্তমানে তাদের কোর্সের অনলাইন সংস্করণ অফার করছে। ল্যাটিন থেকে শুরু করে সাউন্ড প্রোডাকশন থেকে নাচের থিয়োরি পর্যন্ত, প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য একটা বিকল্প রয়েছে।
- যেখানে খুশি অ্যাক্সেস করা যায় – অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মগুলো শিক্ষার্থীদের বিশ্বের যে কোনো জায়গা থেকে শেখার বা শেখানোর সুবিধা প্রদান করে। কোনও নির্দিষ্ট ক্লাসরুমের, যাতায়াতের বা নির্ধারিত সময়সূচীর প্রয়োজন পড়ে না। এর ফলে শিক্ষার্থীদের কেবলমাত্র সময়েরই নয়, পয়সারও সাশ্রয় হয়। যেখানে যেখানে আপনি ওয়াইফাই-এর একটা কানেকশন পাবেন, সেখানে সেখানে আপনার ভার্চুয়াল ক্লাসরুমও পেয়ে যাবেন! যে সকল ব্যক্তিরা পরবর্তী জীবনে আরও শিক্ষালাভ করতে আগ্রহী এটা তাদেরকেও প্রভূত সাহায্য করে।
- অনলাইন লার্নিং আরও বেশী সাশ্রয়কর – দেখতে গেলে পার্সন লার্নিং-এর থেকে অনলাইন লার্নিং আরও বেশি সাশ্রয়কর। পেমেন্ট করার বিভিন্ন বিকল্প, ডিসকাউন্ট এবং স্কলারশিপ রয়েছে যা শিক্ষার্থীদের খরচ তাদের বাজেটের মধ্যে রাখতে সাহায্য করে। যাতায়াত এবং ক্লাস মেটিরিয়াল-এর খরচ বাঁচিয়েও এই বাজেট বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- অনেক বেশী ফ্লেক্সিবল – অনলাইন লার্নিং প্ল্যাটফর্মগুলো শিক্ষার ভবিষ্যৎ হওয়ার আরও বড় কারণ হল এরা চিরাচরিত বা প্রথাগত শিক্ষাব্যবস্থার থেকে অনেক বেশি ফ্লেক্সিবল। শিক্ষার্থীরা তাদের নিজস্ব সময়সূচী এবং শেখার গতি সেট করতে পারে। এটা সেই সকল শিক্ষার্থীদের জন্য খুবই সুবিধাজনক যারা কাজ করার পাশাপাশি পড়াশোনাও চালিয়ে যাচ্ছেন।
বর্তমানে অনলাইন লার্নিং বৃদ্ধি পাওয়ার কারণগুলোর মধ্যে এই কয়েকটা কারণ অন্তর্ভুক্ত। যাই হোক, সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে প্রত্যেক শিক্ষার্থী যেন তাদের নিজস্ব প্রয়োজনীয়তা, চাহিদা এবং লক্ষ্যগুলোকে প্রতিনিয়ত মূল্যায়ণ করে। সকলের অনলাইন লার্নিং পছন্দ না হলেও, সারা বিশ্বের শিক্ষার্থীদের জন্য এটা একটা বৈধ এবং অন্তহীন বিকল্প।